কামরানের মাঝে রাজনৈতিক চেতনার সূচনা ঘটে মূলত ১৯৬৫ সালের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায়। স্কুলের ছাত্র থাকাকালীন সময়েই গায়ে মুজিব কোট চড়িয়েছিলেন কামরান। মুজিবভক্ত নানী দিয়েছিলেন কোটের টাকা। সে সময় কোট তৈরিতে খরচ হয়েছিলো ১১৫ টাকা। ১০০ টাকার কাপড় আর সেলাই বাবদ ১৫ টাকা। বন্দর বাজারের শাহ আবু তোরাব জামে মসজিদ সংলগ্ন একটি টেইলার্স থেকে কোটটি তৈরি করিয়েছিলেন তিনি।জিন্দাবাজার দুর্গাকুমার পাঠশালায় তার পড়াশোনার প্রথম পাঠ। এরপর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পাট শেষ করেন বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময়ই ৬৪২ ভোট পেয়ে তৎকালিন সিলেট পৌরসভার ৩নং তোপখানা ওয়ার্ড থেকে দেশের সর্বকনিষ্ঠ পৌর কমিশনার নির্বাচিত হন তিনি। কমিশনারের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েই কামরান এমসি কলেজে বিএ-তে ভর্তি হন। শিক্ষকরাও মজা করে তাকে ‘কমিশনার সাব’ বলে ডাকতেন।
১৯৭২ সাল থেকেই কামরান সিলেট পৌরসভার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়েন। মাঝে শুধু একবার বিদেশ থাকায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি তিনি। এক এগারো পরবর্তী জরুরি অবস্থা চলাকালীন সময়টি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের জীবনখাতায় উল্লেখযোগ্য অধ্যায়।২০০৮ সালের সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেন কামরান। নির্বাচনের দিন তিনি কুমিল্লা কারাগারে বন্দি। এ নির্বাচনে ৮০ ভাগ ভোটই কামরানের বাক্সে জমা পড়েছিল।
২০১৩ সালে সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে আরিফের কাছে পরাজয়ের পর কামরান আশাহত হলেও ভেঙে পড়েননি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে সিসিকের চতুর্থ নির্বাচনেও কামরান পরাজয় বরণ করেন। তবে তিনি দল কিংবা নেতা-কর্মীদের জন্য আগের অবস্থান থেকে সরে যাননি। পরাজয় তার জন্য বেদনার হলেও তিনি দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন। দলীয় কর্মসূচি ও নেতা-কর্মীদের আগের মতোই সময় দিচ্ছিলেন তিনি।
মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের ছোটবেলা থেকেই, মা সব সময়ই সাহস যুগিয়েছেন তাকে। সে সাহসের উপর ভর করে কামরান আজীবন মানুষের সেবা করে গেছেন। স্ত্রী, দ্ইু ছেলে, এক মেয়ে আর দুই নাতনী নিয়ে ছিল কামরানের নিজের সংসার। সবাইকে কাঁদিয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান।
Posted ১০:২২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৫ জুন ২০২০
Sylheter Janapad | Sylheter Janapad